এবার নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপির আন্দোলনে দলটির নেতারা মাঠে না নামলেও ভাড়া করা লোক দিয়ে নাশকতা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ। তার দাবি, ঢাকার বাইরে থেকে ৩০০ টাকার বিনিময়ে দিনমজুর এনে করে নাশকতা করায় বিএনপি।
গতকাল শনিবার ২ ডিসেম্বর দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ডিবির এ কর্মকর্তা। ২৮ অক্টোবর থেকে ঘটানো প্রতিটি নাশকতায় জড়িত প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দেনে তিনি। হারুন অর রশিদ বলেন, 'বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছেন বিএনপির নেতারা মাঠে সক্রিয় থাকতে না পেরে ঘরে বসে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৩০০ টাকায় দিনমজুর ঢাকায় এনে নাশকতা করাচ্ছে।'
তিনি আর বলেন, ‘সন্ত্রাসী এই টিম পরিচালনার জন্য আছেন কেন্দ্রীয় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতারা। রয়েছেন মহানগর যুবদল, থানা এবং ওয়ার্ডভিত্তিক বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারাও। তারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সমমনা দিনমজুর, খেটে খাওয়া লোকদের দৈনিক ভাড়ার চুক্তিতে ঢাকা মহানগরীতে নিয়ে এসে কখনো কোমল পানীয়ের বোতল, কখনো অন্যান্য কন্টেইনারে কেরোসিন, দেশলাই সরবরাহ করেন। তারা চলন্ত গাড়িতে যাত্রীবেশে উঠে পেছন দিক থেকে আগুন লাগিয়ে দ্রুত নেমে পড়েন এবং পালিয়ে যান। কখনো মোটরসাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে যানবাহনে আগুন লাগানোর ব্যবস্থাও করে থাকে।’
এ সময় হারুন অর রশিদ বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা পুলিশ সদস্য হত্যা, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে ভাঙচুর, পুলিশ হসপিটালে অগ্নিসংযোগ করে অ্যাম্বুলেন্স ও মোটরসাইকেলে অগ্নিকাণ্ড, পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া, লাখ লাখ টাকার সিসি ক্যামেরা নষ্ট ও চুরি করাসহ নানা রকম ধ্বংসলীলার পরে বিভিন্ন মেয়াদে হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছে। জনগণের সম্পৃক্ততা না থাকলেও এই হরতাল এবং অবরোধে জনমনে ভীতি সৃষ্টি করা, জনসম্পদ এবং জীবনের হানি ঘটানোর জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণে তারা আটটি সন্ত্রাসী টিম গঠন করেছে।’
হারুন বলেন, ‘এসব টিমের কাজ হলো-ঝটিকা মিছিল ও ভাঙচুর করা, যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা, ককটেল বিস্ফোরণ করা, ছবি ভিডিও ধারণ করে পৌঁছে দেওয়া এবং ঊর্ধ্বতন নেতাদের নির্দেশে যেকোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ২৯ অক্টোবরে গুলিস্তান থেকে সদরঘাট যাওয়ার পথে তাঁতিবাজার মোড় এলাকায় বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে আগুন লাগানোর ঘটনায় রাজিব হোসেন বিল্লাল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ওঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য। এর মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ, গঠিত টিমের তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ ৩০ নভেম্বর হাজী পারভেজ নামে ছাত্রদল নেতা এবং কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সচিব মাহফুজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তারা চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন। দুই নেতা তাদের অপকর্মের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন।’